সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

গলাচিপায় জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত-আহতদের স্মরণে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৬৫ বার পঠিত

মো. হুমায়ুন কবির
(গলাচিপা উপজেলা প্রতিনিধি):
গলাচিপা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত জুলাই -আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত/ নিহতদের স্মরণে -“স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল” অনুষ্ঠিত হয়েছে। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাসিম রেজা এর সঞ্চালনায় ২৯ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০:৩০ গলাচিপা অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত এ সভায় জুলাই-আগষ্টে সংঘটিত গণহত্যায় আহত/ নিহতের পরিবারকে ফুল দিয়ে বরণ করেন গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার। শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলোয়াত ও পবিত্র গীতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুর রহমান, গলাচিপা সেনাক্যাম্প. কমান্ডার মেজর এমএ মুহিত, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সোহরাব হোসাইন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাও ডা. মো. জাকির হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন গলাচিপা শাখার সেক্রেটারি মাও. মো. জাকির হোসাইন, বিভিন্ন ইউনিয়ন ইউপি. চেয়ারম্যান গণ, গলাচিপার প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পটুয়াখালী জেলার সমন্বক মো. রুবেল মাহমুদ।
এছাড়াও উপস্থিতি ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, গলাচিপা উপজেলার যে সকল জাতির সূর্য সন্তান জুলাই বিপ্লবে নিহত/ আহত হয়েছেন সেসকল শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহত সদস্যবৃন্দ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গলাচিপা উপজেলার সমন্বয়ক, গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সভায় আহত/নিহত পরিবারের সদস্যরা আহত/ নিহতদের স্মৃতিচারণ করে আন্দোলনের সময় ও পরবর্তী সময়ে দেশের এবং তাদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। যাদের রক্তের উপর ভিত্তি করে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি তাঁদেরকে যেন যথাযথ সম্মান জানানো হয়, স্বৈরাচার যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫