সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

গলাচিপায় সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান খানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ বার পঠিত

মো. হুমায়ুন কবির
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর গলাচিপায় সাবেক সংসদ সদস্য পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহীদ আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান খানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর।

বিশেষ অতিথি নুরুল হক নুর তার বক্তব্যে বলেন, “শাহজাহান খান ছিলেন একজন জনমানুষের নেতা, যিনি তার কর্মজীবনে জনগণের সেবা করেছেন। গলাচিপায় বিএনপির জন্ম হয়েছে শাহজাহান খানের হাত ধরে। আজকের এই অনুষ্ঠানে তার কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা একত্রিত হয়েছি।'”

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে পৌর মঞ্চ চত্বরে আয়োজিত দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীর স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা মিয়া। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শাহজাহান খানের সহধর্মিণী আনোয়ারা শাহজাহান খান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শাহজাহান খানের পুত্র ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, চিকনিকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শিপলু খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন মিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম খান, দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও পটুয়াখালী জেলা কমিটির সদস্য আলতাফ হোসেন আকন প্রমুখ।

শাহজাহান খানের পুত্র শিপলু খান বলেন, ‘আমাদের বাবা ছিলেন একজন সাহসী নেতা, যার সংগ্রাম আজও আমাদের পথ দেখাচ্ছে।'” তিনি আমৃত্যু বিএনপির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগ করেছেন। আমি ও আমার পরিবার গলাচিপা দশমিনার মানুষের জন্য কাজ করে যাবো”

“শাহজাহান খান ১৯৮৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত গলাচিপা উপজেলার অন্যতম নেতা ছিলেন এবং তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এলাকাবাসীর মন জয় করেছিলেন।”

স্মরণসভায় দুপুর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পৌর মঞ্চ চত্বরে উপস্থিত হতে থাকে। এসময় বিএনপির জেলা ও উপজেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, যুবদল, মহিলাদল সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভিপি নুরুল হক নুরের সাথে স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভার শেষে উপস্থিত সবাই একত্রিত হয়ে মরহুম শাহজাহান খানের জন্য দোয়া করেন এবং তার অবদানকে চিরকাল স্মরণে রাখার অঙ্গীকার করেন।

উল্লেখ্য, শাহজাহান খান পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সহ সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৪ নভেম্বর ২০২২ সালে বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে হামলার শিকার হন তিনি, যার ফলে তার কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। সেসময় শোকের ছায়া নেমে এসেছিল স্থানীয় ও দলীয় মহলে।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫