সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

চান্দিনার মোকামবাড়ি হইতে বদরপুর বাজার সড়কটির বেহাল দশা

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২০ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্টঃ-

কুমিল্লার চান্দিনা মোকামবাড়ি হইতে বদরপুর সড়কটি পৌরসভার ময়লা ও সড়কটির দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার কারণে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে ভোগান্তির পথ শেষ নেই। পৌরসভা ময়লাপালার জন্য নির্দিষ্ট কোন ডাম্পিং জোন না থাকার কারণে তারা যখন যেখানে খুশি সেখানে পৌরসভার সমস্ত ময়লা ফেলছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ফেলার পর সর্বশেষ তাদের নিরাপদ স্থানে হিসেবে বেছে নিয়েছে মোকামবাড়ি – বদরপুর সড়কের ডুমুরিয়া ব্রিজের সংলগ্ন রাস্তা দুইপাশ। সড়কের দুই পাশে দীর্ঘদিন ধরে সমস্ত পৌরসভার ময়লা পৌর গাড়ি দিয়ে এনে রাখার কারণে ময়লা দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচলে বহু কষ্ট হচ্ছে। ময়লা গুলো মেঘ বৃষ্টিতে ভিজে এমন তীব্র দুর্গন্ধ বের হচ্ছে এ রাস্তা দিয়ে মানুষ যানবাহন দিয়ে যাওয়া আসা করার সময় ময়লা দুর্গন্ধে অনেকে বমি করে দেয়। মেয়েকে নাক চেপে ধরে বহু কষ্টে জায়গাটা পার হচ্ছে।
পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠার দুই যুগেও গড়ে উঠেনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিজস্ব কোন ডাম্পিং সেন্টার। বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন সময়ে সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে পৌর এলাকার সব ময়না-আবর্জনা। দীর্ঘ কয়েক বছর একই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় ওইসব এলাকায় দেখা দেয় চরম জনদুর্ভোগ।

১৯৯৭ সালে চান্দিনা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনো মহাসড়কের পাশে আবার কখনো আঞ্চলিক সড়কগুলোর পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পৌর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থান বেছে নেয় গুরুত্বপূর্ণ চান্দিনা-বদরপুর সড়কের ডুমুরিয়া ব্রিজ এলাকা। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরে যাতায়াতের অন্যতম প্রবেশপথ ওই চান্দিনা-বদরপুর সড়ক। সড়কের প্রবেশদ্বারে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনার স্তূপ দেখে মনে হয় রাস্তা তো নয় যেন ময়লার ভাগাড়! শুধুমাত্র পৌরসভার ময়লা ফেলার কারণে রাস্তাটি নষ্ট হয়নি রাস্তাটির দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে রাস্তার মাঝখানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয় যানবাহন ও মানুষ চলাচলের ভোগান্তির শেষ নেই।

পৌর কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় সড়কের উপর ফেলা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সড়কে চলাচলরত যাত্রী ও পথচারীরা। ওই সড়কে চলাচলরত স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষদের নাক-মুখ চেপে অতিক্রম করতে হচ্ছে সড়কের ওই অংশটি। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার বাসিন্দারাও।

সড়কটির দুইশ’ মিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে দুই পাশে প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে পাকা সড়কটি। এতে যান চলাচলেও চরম ভোগান্তি দেখা দিচ্ছে। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন যাবত ওই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পাশের সরকারি খাল ও মানুষের জয়গায়ও ময়লার স্তূপে চাপা পড়ে যাচ্ছে।

ওই সড়কে চলাচলরত যাত্রী উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের করতলা গ্রামের বাসিন্দা রাজন সরকার জানান, সড়কটি দিয়ে উপজেলার বরকরই, মাইজখার, বাড়েরা, মহিচাইল ও কেরণখাল ইউনিয়নের হাজারও মানুষের প্রতিদিনের যাতায়াত। যখনই ডুমুরিয়া ব্রিজের কাছাকাছি আসি তখনই নাকে-মুখে কাপড় বা টিস্যু চাপা দিতে হয়। পৌরসভার এমন অব্যবস্থাপনা মোটেও জনগণের কাম্য নয়।

সিএনজি চালক ফখরুল জানান, যাত্রীরা নাক-মুখ চেপে ধরার সুযোগ থাকলেও আমরা যারা ড্রাইভার প্রতিদিন দুর্গন্ধ নিয়েই চলাচল করছি। ওই ময়লার স্তূপে প্রায় সময় আগুন দেয়া হয়। ওই আগুনে আবর্জনার সঙ্গে থাকা পশু-পাখির মরদেহ পুড়ে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী ওই দুর্গন্ধে বমিও করে ফেলে। স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম মুন্সি জানান, ডুমুরিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় আমার ১২ শতাংশ জমি রয়েছে। যখন থেকে ওই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা শুরু করেছে তখন আমরা বাঁধা দেই। কিন্তু কেউ আমাদের কথা কর্ণপাত করেনি। সড়কের দুইপাশে ময়লার স্তূপ বেড়ে যখন আমাদের জায়গা ভরাট হয়ে যাচ্ছিল তখন আমরা মেয়র মফিজুল ইসলামকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘জায়গা বিক্রি করে চলে যাও’। এখন নতুন মেয়র আসছেন, আমরা ওই মেয়রকেও জানাই। তিনিও কোন ব্যবস্থা করেননি।

মহারং গ্রামের আবদুল আলিম অভিযোগ করেন- তার বাড়ির সামনে সড়কের পাশে প্রতি রাতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে যায় পৌরসভার কর্মীরা। এতে তার পরিবারসহ আশপাশের লোকজনদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোন সুরাহা হয়নি।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫