সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সাগরে যেতে পারেনি লক্ষাধিক মাছ ধরা ট্রলার

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৪০ বার পঠিত

মোঃ তৌহিদুল ইসলাম,
কলাপাড়া- মহিপুর, প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও সাগরে যেতে পারেনি পটুয়াখালীর উপকূলের সহস্রাধিক মাছ ধরা ট্রলার। উত্তর বঙ্গোপসাগরসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় তারা যেতে পারেননি। যেসব ট্রলার আগেভাগে যাত্রা শুরু করেছিল তারাও বঙ্গোপসাগরের অভ্যন্তরে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে ফিরে এসেছে। এসব মাছ ধরা ট্রলার এখন নোঙর করে আছে মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুরের শিববাড়িয়া নদিতে। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও সাগরে যেতে না পারায় এসব ট্রলারের অর্ধলক্ষাধিক জেলে অপেক্ষা করছেন অনুকূল আবহাওয়ার। মৌসুমের শুরুতে ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্র যাত্রার প্রাক্কালে এমন হোঁচটে হতাশা বিরাজ করছে এসব জেলে এবং ব্যবসায়ীর মধ্যে। এদিকে সাগর মোহনার অন্ধারমানিক, রাবনাবাদ, বুড়া গৌড়াঙ্গ, তেঁতুলিয়া, ডিগ্রী নদীতে জেলেদের জালে খুব কম ইলিশ পড়ছে। তবে আকারে ছোট
এসব মাছের দামও অনেক বেশি, যা সাধারণ ক্রেতাদের সামর্থ্যের বাইরে। জেলেসহ ব্যবসায়ীরা জানান, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নদী কিংবা সাগরে ইলিশ পাওয়া গেলেও জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম ধরা হয়। কিন্তু চিংড়িসহ সামুদ্রিক প্রায় ৪৫০ প্রজাতির মাছের প্রজননের জন্য মৌসুমের শুরুতেই ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫দিন, মা ইলিশের নির্বিঘ্ন প্রজননের জন্য ৮ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিনসহ মোট ৮৭ দিন জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হয়। এরপরে জাটকা সংরক্ষণের জন্য ছয় মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। রয়েছে বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব। ফলে বছরের অর্ধেকটা সময় জেলেদের ঘাটে বসে কাটাতে হয়।

আলীপুর ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতির সাবেক সভাপতি নুরু মাঝি বলেন উপকূলের জেলেরা সাধারণত ইলিশ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকে। আয় থেকে দাদনসহ দায়দেনা শোধ করে পরিবারের জন্য কিছু সঞ্চয় করব। কিন্তু ৬৫ দিনের অবরোধসহ আবহাওয়ার বৈরী আচরণ আমাদের দিন দিন দায়দেনাগ্রস্ত করে রাখছে।

মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী ও ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা বলেন, গত বছর ইলিশের আকালের ফলে অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকসহ এনজিওতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। জেলেরাও গত বছরের দাদন শোধ না করতে পারলেও সাগরে যাওয়ার জন্য নতুন করে দাদন নিয়েছেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব ট্রলার ঘাটে নোঙর করা। মৌসুমের শুরুতে ৬৫ দিনের অবরোধের সময়সীমা পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আলীপুর-কুয়াকাটা ট্রলার মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, গত বছরের মতো এ বছরও যদি এমন হয়, অনেক জেলেসহ ব্যবসায়ীরা অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়তে পারেন। এতে এ খাতের কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫