সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি চাচ্ছেন সাংবাদিক গোলাপ

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১১০ বার পঠিত

বিজয় কর রতন,
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-

হাওর অঞ্চলের সিনিয়র সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফেঁসে গেছেন। বিগত ২০২০সালে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানায় ইতালি প্রবাসী শেখ ইকবাল ও বাবু শেখ কে আসামি করে পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম এই মামলাটি করেছেন। পরে ওই মামলায় সাংবাদিক গোলাপের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয় । সাংবাদিক গোলাপের দাবি প্রবাসী ইকবালের যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে তার সাথে কোন রকম সম্পর্ক ছিলনা। তিনি শুধু সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বলে সাংবাদিক গোলাপ জানিয়েছেন। জানা গেছে দেশ যখন করোনায় আতঙ্ক ঠিক তখন ইতালি প্রবাসী শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল নিজ বাড়ি ঘাগড়াতে আসেন। এই খবর শুনে২০২০ সালের১৩ মার্চ মিঠামইন থানার পুলিশের এস আই নজরুল ইসলাম এবং এ এস আই কিরণ মন্ডল ইকবালের বাড়িতে এসে করোনার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ টাকা চাদা দাবি করেন বলে অভিযোগ আনেন ইকবাল ও পরিবারের লোকজন। ওই সময় ইকবালের পুলিশের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করা ভিডিও বার্তা ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়। এ নিয় দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হলে মিঠামইন থানার এস আই নজরুল ইসলাম ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটি মিথ্যা দাবী করে বিগত ২০২০সালের ২২মার্চ মিঠামইন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন । এই মামলায় আসামি করা হয় শেখ হুসাইন মোহাম্মদ ইকবাল এবং বাবু শেখ কে। মামলা করার পরপরই পুলিশ শেখ ইকবাল কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত ৮দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন । রিমান্ড শেষে শেখ ইকবাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দিতে সাংবাদিক গোলাপ এর উপর প্ররোচনার অভিযোগ আনেন। তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে ‘ সাংবাদিক গোলাপের কথায় একটা সাক্ষাৎ কার দেই।তখন গোলাপ বলে সাক্ষাৎ কার হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনতে হবে ।তখন গোলাপের প্ররোচনায় আমি এক পর্যায়ে দারোগার বিরুদ্ধে ১লাখ টাকা চাদা দাবির অভিযোগ করি একটি ভিডিও তে।” ইকবালের ছোট ভাই শেখ ইফরান ও পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে। শেখ ইকবালের জবানবন্দির পর পরই ২০২০সালের ১০মে সাংবাদিক গোলাপকে গ্রেফতার করা হয়।সে জন্য তিনি ৫মাস৫দিন কারাগারে ছিলেন। সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ ” বিডি চ্যানেল ফোর “-এর মিঠামইন প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি শুধু সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।এর বেশি কিছু না। শেখ ইকবালের বক্তব্যের একটি ভিডিও বার্তা ‘ বিডি চ্যানেল ফোর ‘ এ সমপ্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে কোন মামলা হয়নি। শুধু ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটিকে কেন্দ্রকরে মামলা করা হয়েছে। পুলিশকে নিয়ে শেখ ইকবালের যে ভিডিও বার্তাটি ভাইরাল করা হয়েছে তা সাংবাদিক গোলাপের ধারন করা না দাবী করা হচ্ছে । সাংবাদিক গোলাপ আরও জানান আমি পুলিশ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের রোষানলের শিকার হয়েছি। বিডি চ্যানেল ফোর এর সম্প্রচার করা ভিডিও এবং ফেসবুকের ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখতে একই রকম । তবে ইকবালের বক্তব্যের ধরন একরকম না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাজউদ্দীন আহমেদ বিষয় গুলো খতিয়ে দেখেননি। শুরু ইকবালের দেয়া স্বীকারোক্তি বক্তব্যের উপর ভিত্তিতে শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল, শেখ বাবু আহম্মদ এবং সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ কে আসামি করে তাড়াতাড়ি করে আদালতে চর্জশিট দাখিল করে দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন । তবে ইকবালের একাধিক ভিডিও সম্পর্কে কোন মন্তব্য নেয় চার্জশিটে। নেয় মোবাইল ফরেনসিক রিপোর্ট ও। সাংবাদিক গোলাপ এই মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা থেকে অব্যাহতি চাচ্ছেন। এদিকে পুলিশের করা এই চাঞ্চল্যকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার বিচার কাজ শুরু হয়েছে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে। মামলার প্রধান আসামি শেখ ইকবাল উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি এখন পলাতক আছেন । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ইকবাল পরিবার পরিজন নিয়ে ইতালিতে বসবাস করছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে ইতিমধ্যে কয়েকবার মামলার সাক্ষীদের নামে সমনও জারি করা হয়েছে।তবে আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতেছেন না কেউ । সাংবাদিক গোলাপকে আইনী সহায়তা দিচ্ছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরএর পক্ষে অ্যাডভোকেট কাউসার হোসাইন এবং শেখ বাবুর পক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট বিল্লাল মজুমদার।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫