সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বকশীগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪
  • ৯২ বার পঠিত

সরকার আব্দুর রাজ্জাক
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দৈনিক সমকাল সাংবাদিক জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য মাসুদ উল হাসান সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে নিজ বাসায় ফেরার পথে ৭ জুন দিবাগত রাত ১২ ঘটিকার সময় বকশীগঞ্জ দক্ষিন বাজার এলাকায় বকশীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও তার স্বামী আতিক সিদ্দিকী নেতৃত্বে সাংবাদিক মাসুদ হামলার শিকার হন। হামলা কারীরা সাংবাদিক মাসুদকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তার মোটর সাইকেল গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, মোটর সাইকেল ভাংচুর,ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ৭ জুন দিবাগত রাতেই সাংবাদিক মাসুদ বাদী হয়ে উল্লেখিত দুই ব্যাক্তিসহ নামীয় ৪ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত আরও ৪/৫ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল আহাদ খান।
জানা যায়,বকশীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতির বিরুদ্ধে জামালপুরের আদালতে একটি চেক ডিজওনার মামলা হয়। ওই মামলার তথ্য সংগ্রহ করেন জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য দৈনিক সমকাল সাংবাদিক মাসুদ উল হাসান মাসুদ। বিষয়টি জানার পর মামলার বিষয়ে কোন সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য বলেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতির স্বামী আতিক সিদ্দিকী। বিষযটি স্থানীয় সকল সাংবাদিক জানার পর একটি নিউজ তৈরি করেন। নিউজ তৈরি শেষ করে বাসায় ফেরার পথে ৭ জুন দিবাগত রাত ১২ ঘটিকার সময় বকশীগঞ্জ দক্ষিন বাজার এলাকায় বকশীগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও তার স্বামী আতিক সিদ্দিকী নেতৃত্বে সাংবাদিক মাসুদ হামলার শিকার হন। হামলা কারীরা সাংবাদিক মাসুদকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তার মোটর সাইকেল গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, মোটর সাইকেল ভাংচুর,ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে সহকর্মী সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক মাসুদকে উদ্ধার করে। হামলায় আহত সাংবাদিক মাসুদ বকশীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ জুন দিবাগত রাতেই উল্লেখিত দুই ব্যাক্তিসহ নামীয় ৪ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত আরও ৪/৫ জন। বকশীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার তারেক মাসুদ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
উল্লেখ্য বকশীগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস মহিলা চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও তার স্বামী আতিক সিদ্দিকী মরহুম সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের উপরও হামলা করে ছিলেন। মরহুম সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে বকশীগঞ্জ শহর থেকে ধরে নিজ বাসায় নিয়ে পিটিয়ে আহত করে ছিলেন। উল্লেখিত দুই ব্যাক্তি প্রকাশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে ছিলেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জহুরা বেগম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবিও ভাংচুর মামলার বাদী। বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর মামলার আসামী হিসেবে গ্রেফতার হয়ে ছিলেন সাবেক ভাইস মহিলা চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতির স্বামী আতিক সিদ্দিকী।
এব্যাপারে দৈনিক সমকাল পত্রিকার বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য মাসুদ উল হাসান জানান, আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আতিক সিদ্দিকীর নেতৃত্বে রাতের অন্ধকারে কতিপয় লোক আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা করে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আসামীদের গ্রেফতারের দাবি করছি।
বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ লায়ন জানান, হামলার ঘটনায় সাংবাদিক মাসুদ গুরুত্বর আহত হয়েছে। তৎক্ষনাত লোকজন ও সহকর্মী সাংবাদিকরা উপস্থিত না হলে সাংবাদিক মাসুদকে পিটিয়ে মেরে ফেলতেন সন্ত্রাসী আতিক সিদ্দিকী। তিনি আরও জানান, আতিক সিদ্দিকী ও তার লোকজন মরহুম সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের উপর হামলা, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর মামলাসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। আমি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবি করছি।
জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট ইউসুফ আলী জানান, এ ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। কারণ আতিক সিদ্দিকী সন্ত্রাসী কায়দায় একাধিকবার একাধিক সাংবাদিকের হামলা করে চলেছেন।
এব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল আহাদ খান জানান অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫