সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ময়মনসিংহের চরকালিবাড়িতে আলতাব হত্যাকান্ডের মুলহোতা রাসেল অস্ত্রসহ গ্রেফতার

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪
  • ৫১ বার পঠিত

জে,এইচ সিয়াম
স্টাফ রিপোর্টার

ময়মনসিংহ নগরীর চরকালিবাড়ি (পীরবাড়ি) আলতাব আলী হত্যাকান্ডের মুলহোতা সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর রাসেল খান ইমন অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম টানা অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। রাসেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করে। পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে চর কালিবাড়ির চর থেকে রাসেলের দেখানো মতে একটি সচল বন্ধুক উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকির কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ আরো জানান, নগরীর চর কালীবাড়ী পীরবাড়ী রোডে বায়তুন নূর জামে মসজিদের কাছে মাইনুদ্দিন মানু মিয়ার সাথে রাসেল খান ইমনের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে গত ২১ মে মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী রাসেল খান ইমনের নেতৃত্বে বিশাল একটি সন্ত্রাসী চক্র মানু মিয়ার ভাতের হোটেলে তাকে হোটেলের ভিতর থেকে টেনে হেচড়ে বের করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ সময় আলতাব আলী নামে এক ব্যক্তি মসজিদ থেকে এশার নামাজ পড়ে ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মানু মিয়াকে মারপিট করতে দেখে ফিরাতে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী রাসেল তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় আলতাব আলীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আশিকুর রহমান বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং-৬৩, তারিখ-২২/০৫/২০২৪ইং, ধারা- ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৬/৩০২/১১৪/৫০৬(২)/৩৪ দায়ের করেন।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার সার্কেল অফিসার এবং ওসি মাইন উদ্দিনের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেনের পরিকল্পনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি চৌকস টিম হত্যাকান্ডের পর থেকে টানা অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হত্যাকান্ডের মূলহোতা রাসেল খান ইমনকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের সাতারপুল বৌলাই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। অভিযানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ সাহা, এসআই ইকবাল হোসেন, এসআই মতিউর রহমান, এএসআই হুমায়ুন কবির সহ অন্যান্যরা অংশ নেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল পুলিশকে জানায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জন্য নিজের শক্তি জোগান দেয়ার জন্য সঙ্গীয় দলবল নিয়ে অস্ত্র সহ মহড়া দেওয়ার সময় ত্রাস সৃষ্টি করে তার সাথে থাকা একনলা বন্দুক দিয়ে গুলি করে। গুলিটি নিহত আলতাবের ডান পায়ের হাটুর সামান্য নিচে পিছন হতে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। তিনি আরো বলেন, রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।

আসামীর স্বীকারোক্তি অনুসারে শুক্রবার ভোররাতে চরকালীবাড়ী মধ্যপাড়া আঃ মজিদ হামতি এর বসত বাড়ীর বসত ঘরের সামনের আঙ্গিনায় থাকা লেবু গাছের নিচে শুকনা পাতা স্তুপের ভিতরে একটি সাদা রংয়ের প্লাষ্টিকের বস্তায় মোড়ানো অবস্থায় রাসেল নিজ হাতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে একটি প্লাষ্টিকের বস্তা বের করে দেয়। বস্তার ভিতরে একনলা একটি বন্দুক এবং বন্দুকের চেম্বারে একটি খালি ( হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত) গুলির খোসা পাওয়া যায়। ব্রিফিংকালে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫