ডেক্স রিপোর্ট
ময়মনসিংহ নগরীর চরকালিবাড়ি (পীরবাড়ি) আলতাব আলী হত্যাকান্ডের মুলহোতা সন্ত্রাসী রাসেল বাহিনীর রাসেল খান ইমন অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম টানা অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। রাসেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করে। পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে চর কালিবাড়ির চর থেকে রাসেলের দেখানো মতে একটি সচল বন্ধুক উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকির কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ আরো জানান, নগরীর চর কালীবাড়ী পীরবাড়ী রোডে বায়তুন নূর জামে মসজিদের কাছে মাইনুদ্দিন মানু মিয়ার সাথে রাসেল খান ইমনের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে গত ২১ মে মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী রাসেল খান ইমনের নেতৃত্বে বিশাল একটি সন্ত্রাসী চক্র মানু মিয়ার ভাতের হোটেলে তাকে হোটেলের ভিতর থেকে টেনে হেচড়ে বের করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ সময় আলতাব আলী নামে এক ব্যক্তি মসজিদ থেকে এশার নামাজ পড়ে ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মানু মিয়াকে মারপিট করতে দেখে ফিরাতে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী রাসেল তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় আলতাব আলীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আশিকুর রহমান বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং-৬৩, তারিখ-২২/০৫/২০২৪ইং, ধারা- ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৬/৩০২/১১৪/৫০৬(২)/৩৪ দায়ের করেন।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার সার্কেল অফিসার এবং ওসি মাইন উদ্দিনের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেনের পরিকল্পনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি চৌকস টিম হত্যাকান্ডের পর থেকে টানা অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে হত্যাকান্ডের মূলহোতা রাসেল খান ইমনকে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের সাতারপুল বৌলাই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। অভিযানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ সাহা, এসআই ইকবাল হোসেন, এসআই মতিউর রহমান, এএসআই হুমায়ুন কবির সহ অন্যান্যরা অংশ নেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল পুলিশকে জানায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জন্য নিজের শক্তি জোগান দেয়ার জন্য সঙ্গীয় দলবল নিয়ে অস্ত্র সহ মহড়া দেওয়ার সময় ত্রাস সৃষ্টি করে তার সাথে থাকা একনলা বন্দুক দিয়ে গুলি করে। গুলিটি নিহত আলতাবের ডান পায়ের হাটুর সামান্য নিচে পিছন হতে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। তিনি আরো বলেন, রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
আসামীর স্বীকারোক্তি অনুসারে শুক্রবার ভোররাতে চরকালীবাড়ী মধ্যপাড়া আঃ মজিদ হামতি এর বসত বাড়ীর বসত ঘরের সামনের আঙ্গিনায় থাকা লেবু গাছের নিচে শুকনা পাতা স্তুপের ভিতরে একটি সাদা রংয়ের প্লাষ্টিকের বস্তায় মোড়ানো অবস্থায় রাসেল নিজ হাতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে একটি প্লাষ্টিকের বস্তা বের করে দেয়। বস্তার ভিতরে একনলা একটি বন্দুক এবং বন্দুকের চেম্বারে একটি খালি ( হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত) গুলির খোসা পাওয়া যায়। ব্রিফিংকালে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আনোয়ার হোসেন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।