বিজয় কর রতন
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে যখন মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা, তখন স্বস্তি ফেরাতে কিশোরগঞ্জে ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি করছে কিশোরগঞ্জের আনোয়ার শাহ (রহ.) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৮শে অক্টোবর) বিকালে শহরের পুরানথানা শহীদী মসজিদের সামনে দেখা যায়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সবজি বিক্রি করছে। ক্রেতাদের মাঝেও বেশ সাড়া ফেলেছে এই সবজির দোকান। শিক্ষার্থীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। সবজি বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আর ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, লাউসহ নানা প্রকার সবজি পাওয়া যাচ্ছে বাজারের চেয়ে ১০-৩০ টাকা কমে।
আনোয়ার শাহ (রহ.) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সবজি এনে ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি করছে। সেখানে লাউ, মিস্টিকুমড়া, টমেটো, মরিচ, মুলা, বেগুন, পেঁপে, লালশাক, শসা, লতি, করলা, পুঁইশাকসহ অন্যান্য সবজি পাওয়া যাচ্ছে। বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। নিয়মিত এমন কার্যক্রমের প্রত্যাশা তাদের। আয়োজকরা জানান, বাজারে যে লাউ ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয় সেটা এ ক্রয়মূল্যে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজিও বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মূলে রয়েছে সিন্ডিকেট। ওইসব সিন্ডিকেট ভাঙার লক্ষ্যে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সবজি কিনে বিনা লাভে ভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেট নির্মূল করা পর্যন্ত বিক্রির কার্যক্রম চলতে থাকবে। জেলা শহরের পুরানথানা এলাকা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির চিন্তা আছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিলবে সবজি। সবজি কিনতে আসা ফাতেমা আক্তার বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ১০০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। কিন্তু এখানে প্রায় সব সবজি ৬০ টাকার নিচে, তাই এখান থেকে সবজি কিনেছি। বাজারে দাম বাড়ানোর পেছনে কাদের হাত আছে, তাদের বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা ন্যায্য দামে বাজার করতে চাই। রুহুল আমিন বলেন, বাজারে গেলে সবজির দাম শুনে ভয় লাগে। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের জন্য জীবন চলা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমি কম দামে সবজি বিক্রির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আশরাফ আলী শাওন বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষক থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করে আনা হয়েছে। সেগুলো গ্রাহকের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশিদ বলেন, প্রান্তিক কৃষক থেকে সবজি এনে কেনা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাচ্ছেন। আমাদের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।