সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

সিন্ডিকেট ভাঙতে ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি, ক্রেতাদের ভিড়

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১২ বার পঠিত

বিজয় কর রতন
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে যখন মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা, তখন স্বস্তি ফেরাতে কিশোরগঞ্জে ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি করছে কিশোরগঞ্জের আনোয়ার শাহ (রহ.) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৮শে অক্টোবর) বিকালে শহরের পুরানথানা শহীদী মসজিদের সামনে দেখা যায়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সবজি বিক্রি করছে। ক্রেতাদের মাঝেও বেশ সাড়া ফেলেছে এই সবজির দোকান। শিক্ষার্থীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। সবজি বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আর ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, লাউসহ নানা প্রকার সবজি পাওয়া যাচ্ছে বাজারের চেয়ে ১০-৩০ টাকা কমে।
আনোয়ার শাহ (রহ.) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সবজি এনে ক্রয়মূল্যে সবজি বিক্রি করছে। সেখানে লাউ, মিস্টিকুমড়া, টমেটো, মরিচ, মুলা, বেগুন, পেঁপে, লালশাক, শসা, লতি, করলা, পুঁইশাকসহ অন্যান্য সবজি পাওয়া যাচ্ছে। বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। নিয়মিত এমন কার্যক্রমের প্রত্যাশা তাদের। আয়োজকরা জানান, বাজারে যে লাউ ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয় সেটা এ ক্রয়মূল্যে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজিও বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মূলে রয়েছে সিন্ডিকেট। ওইসব সিন্ডিকেট ভাঙার লক্ষ্যে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সবজি কিনে বিনা লাভে ভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেট নির্মূল করা পর্যন্ত বিক্রির কার্যক্রম চলতে থাকবে। জেলা শহরের পুরানথানা এলাকা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির চিন্তা আছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিলবে সবজি। সবজি কিনতে আসা ফাতেমা আক্তার বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ১০০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। কিন্তু এখানে প্রায় সব সবজি ৬০ টাকার নিচে, তাই এখান থেকে সবজি কিনেছি। বাজারে দাম বাড়ানোর পেছনে কাদের হাত আছে, তাদের বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা ন্যায্য দামে বাজার করতে চাই। রুহুল আমিন বলেন, বাজারে গেলে সবজির দাম শুনে ভয় লাগে। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের জন্য জীবন চলা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমি কম দামে সবজি বিক্রির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আশরাফ আলী শাওন বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষক থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করে আনা হয়েছে। সেগুলো গ্রাহকের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশিদ বলেন, প্রান্তিক কৃষক থেকে সবজি এনে কেনা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাচ্ছেন। আমাদের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫