সরকার আবদুর রাজ্জাক
বকশীগঞ্জ,জামালপুর প্রতিনিধিঃ-
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচুত্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরেই বকশীগঞ্জে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম। হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে। হত্যা ও নাশকতা মামলার আসামী হয়েছেন ৬ ইউপি চেয়ারম্যান। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মা গোপনে রয়েছেন তারা। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে নাগরিক সেবা কার্যক্রম দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টিতেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী। মাত্র একটিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মেরুরচর ইউনিয়নে উপজেলা যুবলীগের সদস্য সিদ্দিকুর রহমান,নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সাত্তার,বাট্টাজোড় ইউনিয়নে উপজেলা আ’লীগের উপদেষ্ঠা মোখলেছুর রহমান জুয়েল তালুকদার,ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা মশিউর রহমান লাকপতি,সাধুরপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবু,বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সভাপতি আলমগীর কবীর আলমাছ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। শুধু মাত্র বগারচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমানিক মাসুম। পরবর্তীতে নিলাক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে উপজেলা নির্বাচন করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যানদের অপসারনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। সেই থেকে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়েন তারা। অপসারনের দাবিতে মিছিল-মানববন্ধন ও হামলার ভয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খান ওইসব চেয়ারম্যানরা। এদের মধ্যে মেরুরচর,বগারচর,ও সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা ও নাশকতাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। তাছাড়াও ধানুয়া কামালপুর,বকশীগঞ্জ সদর ও বাট্টাজোড় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও হয়েছে নাশকতা মামলা। একারণে মামলার পর থেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পলাতক রয়েছেন বকশীগঞ্জ উপজেলার ৬ ইউপি চেয়ারম্যানরা। তাই কাঙ্খিত নাগরিক সেবা পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ। চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিততে বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ,মৃত্যু সনদ পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেইসব ইউনিয়নের মানুষজন।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বলেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিততে সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা অনুসারে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিছু জায়গায় সাময়িক একটু সমস্যা হচ্ছে তবে দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।