সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রাজশাহীতে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৩ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট-

রাজশাহীতে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

সভায় রাসিক প্রশাসক মহোদয় বলেন, সারাদেশে জরাযুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাংলাদেশে নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এ টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। সরকার এই টিকা বিনামূল্যে প্রদান করছে। টিকা পেতে নিবন্ধন করতে হবে www.vaxepi.gov.bd. ওয়েবসাইটে।

তিনি বলেন, আজকের কিশোরী আগামী দিনের মা। তাদের সুস্বাস্থোর উপর নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষা। নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ সরকার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা সংযোজন করেছে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে যা চলবে ১৮দিন ব্যাপী। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার রুখে দিতে হবে। এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য পরিচালিত হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।

বাল্যবিবাহ রোধ, অনিয়ন্ত্রিত যৌন সংশয় নানাবিধ ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ কার্যক্রমকে বাস্তবায়িত করতে সকলকে আন্তরিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে এ বিষয়ে এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আপনারা আমরা সকলে মিলে এ কাজটি করতে চাই। এ্যাডভোকেসি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ আনোয়ারুল কবীর, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক। এইচপিভি ক্যাম্পেইন বিষয়ে সার্বিক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ, রাসিকের সচিব মোঃ মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক যোবায়ের হোসেন, গণপূর্ত রাজশাহীর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ফজলুল হক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডাঃ কামরুজ্জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডাঃ ফারহানা হক, রাসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ইমামগণ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি, পাথ এর সহযোগিতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
পরে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে অপর কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ আনোয়ারুল কবীর, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাঃ আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস, উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা মোঃ সানাউল্লাহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫