সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

হত্যা-নাশকতাসহ একাধিক মামলায় পলাতক বকশীগঞ্জের ৬ ইউপি চেয়ারম্যান. নাগরিক সেবা ব্যাহত

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৩ বার পঠিত

সরকার আবদুর রাজ্জাক
বকশীগঞ্জ,জামালপুর প্রতিনিধিঃ-

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচুত্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরেই বকশীগঞ্জে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম। হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে। হত্যা ও নাশকতা মামলার আসামী হয়েছেন ৬ ইউপি চেয়ারম্যান। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মা গোপনে রয়েছেন তারা। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে নাগরিক সেবা কার্যক্রম দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টিতেই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী। মাত্র একটিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মেরুরচর ইউনিয়নে উপজেলা যুবলীগের সদস্য সিদ্দিকুর রহমান,নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সাত্তার,বাট্টাজোড় ইউনিয়নে উপজেলা আ’লীগের উপদেষ্ঠা মোখলেছুর রহমান জুয়েল তালুকদার,ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে যুবলীগ নেতা মশিউর রহমান লাকপতি,সাধুরপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবু,বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সভাপতি আলমগীর কবীর আলমাছ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। শুধু মাত্র বগারচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন মোসাদ্দেকুর রহমান প্রমানিক মাসুম। পরবর্তীতে নিলাক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে উপজেলা নির্বাচন করেন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যানদের অপসারনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। সেই থে‌কে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়েন তারা। অপসারনের দাবিতে মিছিল-মানববন্ধন ও হামলার ভয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খান ওইসব চেয়ারম্যানরা। এদের মধ্যে মেরুরচর,বগারচর,ও সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা ও নাশকতাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। তাছাড়াও ধানুয়া কামালপুর,বকশীগঞ্জ সদর ও বাট্টাজোড় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও হয়েছে নাশকতা মামলা। একারণে মামলার পর থেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পলাতক রয়েছেন বকশীগঞ্জ উপজেলার ৬ ইউপি চেয়ারম্যানরা। তাই কাঙ্খিত নাগরিক সেবা পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ। চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিততে বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ,মৃত্যু সনদ পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেইসব ইউনিয়নের মানুষজন।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বলেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিততে সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা অনুসারে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিছু জায়গায় সাময়িক একটু সমস্যা হচ্ছে তবে দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫