সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সন্দেহ ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাপ, ‌নিখোঁজের ২‌দিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৯ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্টঃ-

পটুয়াখালীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়ান আল আমিন খন্দকারে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  নিখোঁজের দুই দিন পর সকালে দিকে শহরের লাউকা‌ঠি নদীর তীরে সরকারি খাদ্য গোডাউন ঘাটের পাশ থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে ৬ নভেম্বর সকালে তিনি নিখোঁজ হয়।নিহত মোঃ আল আ‌মিন খন্দকার (২৬) সদর উপজেলার ইটবা‌ড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সারিকখালী গ্রামের মৃত খালেক খন্দকারের ছেলে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে পৌর সভার ৯ নং ওয়ার্ডস্থ বিসিক মাঠ এলাকায় সন্দেহ জনিত কারনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এস আই সোহানের নেতৃত্বে আরও দুইজন সদস্য সিভিল পোশাকে আল- আমীন (২৬), মোঃ জহিরুল ইসলাম (৩০) রাসেল ঘরামীকে (২৮) ধাওয়া করে। এসময় আল- আমীন ও মোঃ জহিরুল ইসলাম ভয় পেয়ে পটুয়াখালী ব্রিজের পশ্চিম পাশে তুলাতলা নামক স্থান থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। নদী সাতরে মোঃ জহিরুল ইসলাম অপরপাশে গেলেও আল-আমীন তখন থেকেই নিখোঁজ।নিখোঁজের ৪৬ ঘন্টা পর আল-আমীনের মরদেহ জেলা সরকারি খাদ্য গোডাউন এর পাশে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের খবর দেয়। পরে অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় এবিষয়ে নিহত আল আমিন এর চাচা বলেন, ওখানে আফগারির লোকেরা যাইয়া শুধুশুধু তাদের ধাওয়া করছে তখন দুইটা মানু ভয়ে পানিতে পরছে। এদের মধ্যে একজন সাতার কেটে ওপার চইলা গেছে আর আমার ভাতিজা আল-আমীন বলছে বাচাও! বাচাও! তখন তারা এই কথাও বলছে যে ওই লোক কি সাতার জানে? এর পর তারা চইলা গেছে। ওনাদের তো উচিত ছিলো সবাইকে বিষয়টা জানানো। ওনারা ধাওয়া দিয়ে একজনকে ধরছে তার সাথে কিছুই পায় নাই। মুলত প্রশাসনের গাফলতির কারনেই এই কাজটা হইছে। নিহতের সাথে নদীতে লাফ দেওয়া জরিরুল ইসলাম  বলেন, ‘আমরা ওই জায়গায় বসা ছিলাম। এর মধ্যেই এজন বলে পাইছি শালাগো ওদের ধর। এই কথা বলার পরই আমি আর আল-আমীন ভয়ে নদীতে ঝাপ দিছি। আমি সাতরাইয়া ওপার চইলা গেছি আল-আমীন আর যাইতে পারে নাই। মাদকের স্যারেরা আমাগো শুধুশুধু ধাওয়া দেছে, কোনো কারন ছাড়াই।এবিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ সফিকউর রহমান মিয়া বলেন সেদিন দুইজন সিপাহি নিয়ে এসয়াই সোহান অভিযান পরিচালনা করেছে৷ আমি যতটুকু জানি তার কাছে গোপন সংবাদ ছিলো যে ওখানে ৩ জন বেক্তি গাজা কেনাবেচা করছে এবং গাজা খাচ্ছে। তাদের উপস্থিতি টের পেয়েই দুইজন নদীতে ঝাপ দেয়।  আরেক জনকে আমাদের অফিসার তল্লাশি করেন কিন্তু তার কাছে কিছু পাওয়া যায়নি। তখন আমাদের অফিসার সেখান থেকে চলে আসে।সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইম‌তিয়াজ মাহমুদ বলেন, সকালে লাউকাঠি নদীর পাড় থেকে ভাসমান অবস্থায় আল আমিন নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫