সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

৯৯৯ এ কল পেয়ে উদ্ধারে গিয়ে পুলিশ সদস্যসহ আহত ৬

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩২ বার পঠিত

জোনাইদাল হাবীব সিয়াম
স্টাফ রিপোর্টার গাজীপুর ঃ-

জোরপূর্বক জমি জবরদখলের ঘটনায় পুলিশের উপর হামলা, মারধর ওয়্যারলেস মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগী জমির মালিকদের অস্ত্রের জিম্মি করে জমি জবরদখল করে। জমি জবরদখল বাঁধা দিতে গেলে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রসীরা হামলা চালিয়ে আহত করে পুলিশের তিন সদস্যকে। পুলিশ পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভুক্তভোগী জমির মালিকরা অভিযোগ করে বলেন শতাধিক চিহৃত সন্ত্রাসী ভাড়া করে জমি জবরদখল করে। পুলিশের সামনে মধ্যপান করে উল্লাস করে সন্ত্রাসীরা।

১১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের গলদাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই শামীম (৩৮) কনস্টেবল পলাশ (৩২) ও রফিকুল ইসলাম (৩৪)।

আহত ভুক্তভোগীরা হলেন, ওমর ফারুক লিপু (৪০), স্মৃতি আক্তার (৩০) ও বাবু (২০)।

ভুক্তভোগী গলদাপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার তিন একর জমি জোরপূর্বক জবরদখল করে নিচ্ছে স্থানীয় শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে। আমরা জমি জবরদখল বাঁধা দিতে গেলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের মারধর করে আহত করে। আমাদের জমির গাছপালা কেটে সাবার করছে। আমাদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছে। সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়ির চারপাশে অবরুদ্ধ জিম্মি করে রাখছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারছি না। এরপর পুলিশে খবর দিলে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। পুলিশের ওয়্যারলেস মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পুলিশ দৌড়ে গভীর গজারি বনের ভেতরে নিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। কনস্টেবল রফিকুলকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। মারধর করা হয়েছে এসআই শামীম ও কনস্টেবল পলাশ নামের এক সদস্যকে। তিনি আরও জানান, জমি জবরদখলের পাশাপাশি কেটে ফেলা হয় তিন শতাধিক গাছপালা।

ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার বলেন, পুলিশ আসার পরপরই তানিম নামে যুবক পুলিশকে পিছন থেকে হামলা করে সাইকেলে ফ্রক দিয়ে আঘাত করে। এসময় দারোগা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। লুটিয়ে মাটিতে পড়ার পরপরই তানিমের ভাই তানিম পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে টানাটানি করে। এরপর পুলিশকে অনেক মারধর শুরু করে। পুলিশ দৌড়ে জঙ্গলের ভেতর পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। একজন ব্যক্তি বাড়িতে এসে ওয়্যারলেস আর ডায়েরি দিয়ে যায়।

আহত শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই শামীম আল মামুন বলেন, মারধরের খবর পেয়ে দুজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরপরই সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে। আমার সঙ্গে থাকা দুজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। একজন পুলিশ সদস্যকে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। আমরা ঝোপঝাড়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করি। আমার ওয়্যারলেস ও মোবাইল নিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত পুলিশ আসলে ওয়্যারলেস মোবাইল আর ডায়েরি ফিরিয়ে দেয় এক নারীর মাধ্যমে।

অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা জমি বিক্রি করে দিয়েছে মালিকের কাছে। কিন্তু জনৈক নিজাম উদ্দিন আমাদের জমিতে কাজ বাধা দেয়। পুলিশের উপর হামলার বিষয়টি আমার জানা নেই।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, পুলিশের উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একজন নারীর মাধ্যমে পুলিশের ব্যবহৃত ওয়্যারলেস ফিরিয়ে দিয়েছে

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫