সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

গলাচিপায় সহস্রাধিক মানুষ পেল ফ্রি মেডিকেল সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ

  • আপডেট সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪২ বার পঠিত

মো. হুমায়ুন কবির
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ঃ-

সকলে মিলে সুখী সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়বো’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘গলাচিপা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক পটুয়াখালী জেলার গলাচিপাতে ‘ফি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ঔষধ সেবা প্রদান করা হয়।২৩ নভেম্বর,২৪ (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গলাচিপা উপজেলার দুস্থ, চিকিৎসাবঞ্চিত, আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। দিনব্যাপী এ ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে এক হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়েছে। মেডিকেল ক্যাম্পে গাইনি, নাক, কান ও গলা, মা ও শিশু , নিউরো সার্জারি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ১১জন চিকিৎসক রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে এছাড়াও বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। এসময় ফ্রি চিকিৎসা নিতে আশেপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম থেকে অসহায়, দরিদ্র বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় করেন। ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা কাজ করে।গলাচিপা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি এইচ এম জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদক এ্যাড. মু. আব্দুর রাজ্জাক ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন এ সংস্থার সহসভাপতি সহিদুল ইসলাম, অর্থবিষয়ক সম্পাদক আমির হোসেন সোহাগ প্রমুখ। সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মু. মোকসছেদুল হাসান রুপম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।ফ্রী মেডিকেলে ক্যাম্পের সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে পটুয়াখালী জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক মু. শাহা আলম, গলাচিপা উপজেলা সাবেক আমীর ও জেলা সদস্য অধ্যাপক মাওলানা মো. ইয়াহিয়া খাঁন, বর্তমান আমীর ডা. মো. জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো.সানাউল্লাহ শামিম ও পৌর আমীর মাওলানা বেলাল বিন সুলতান প্রমুখ।বিনামূল্যে এই চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা খুশি হয়ে আয়োজক ও পৃষ্টপোষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেবাগ্রহীতারা বলেন, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ঔষধ দেয়ার খবর শুনে এখানে তারা এসেছেন। টাকার অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারেননা তাই এই ক্যাম্পে এসে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছেন তারা।
গলাচিপা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর সহ সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ‘আমরা গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত দুস্থ, অসহায়, চিকিৎসা বঞ্চিত, মেহনতী প্রায় ৬’শতাধিক মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করার টার্গেট করলেও সহস্রাধিক লোকের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। গলাচিপা ফাউন্ডেশনের এটা একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।ভবিষ্যতে এই ধরনের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা জানালেন, ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুঃ মোকসছেদুল হাসান রুপম। তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা চিন্তা করে প্রাথমিকভাবে গলাচিপা পৌরসভায় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প শুরু করা হয়েছে। আগামীতে বিভিন্ন ইউনিয়নে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আমরা গলাচিপা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ উপহার দিতে চাই।এ ফাউন্ডেশনের সভাপতি এইচ এম জসীম উদ্দিন জানান, ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পের একমাত্র উদ্দেশ্য মানবিক সেবা দেয়া। আমরা একটি সামাজিক সংগঠন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছি, যে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শুধু চিকিৎসা নয়, শিক্ষা, খাদ্য, বস্ত্র অসহায়, দরিদ্র মানুষের মাঝে পৌঁছে দিবো। এমনকি মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে চাই। আমাদের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সকল স্তরের মানুষের মাঝে এ সেবা পৌঁছে দিবো।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫