সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হাওরবাসী

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৪ বার পঠিত

বিজয় কর রতন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:-

সিলেটকে বন্যা থেকে রক্ষার প্রয়োজনে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্ট্রগ্রাম সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলার কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
২৩ নভেম্বর শনিবার সকালে সিলেটে আয়োজিত এক কর্মশালায় একথা বলেন তিনি। এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় হাওরবাসীর মাঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন চায়ের দোকান আর আড্ডায় এই বিষয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে অলওয়েদার সড়কে কথা হয় অটো মিশুক গাড়ীর ড্রাইভার সুলাইমান মিয়া, হাফিজুর রহমানসহ হাওরের লোকজন জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর অঞ্চল কিশোরগঞ্জ। কৃষি প্রধান এ জেলার মানুষ মূলত কৃষি, মাছ ধরা ও পশু-পাখি পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্তমানে হাওরের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশেষ করে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে হাওরের মাঝখান দিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অল-ওয়েদার সড়ক নির্মাণে বদলে গেছে হাওরের মানুষের ভাগ্য। এতে হাওরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি গতি এসেছে অর্থনীতিতেও।

ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব মিয়া জানান, আমরা সারাজীবন ধরেই দেখতেছি, সিলেটে যখন বন্যা হয় তখন আমাদের এলাকায় পানি নাই, আমরা তখন ধান কাটি। এখন কিছু মানুষ হিংসায় জ্বলে বলাবলি করে আমাদের হাওরের রাস্তার জন্য নাকি সিলেটে বন্যা হয়, তাহলে রাস্তা হওয়ার আগে যে বন্যা হতো তখন কেন হতো? আমাদের রাস্তা অনেক উপকারে এসেছে, রাস্তা ভাঙ্গতে আসলে আমরা জীবন দিবো।

কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, রাস্তাটি নির্মাণের পূর্বে যথাযথ রিচার্সের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারপরও সরকার বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেটা ভালো মনে করবে সেইরকম ব্যবস্থা নিতে পারে।

৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটারের অল-ওয়েদার সড়কটি নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০২০ সালে ৮ অক্টোবর হাওরের বিস্ময় কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫