সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরার আকর্ষণ সড়কপথে সুন্দরবন

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৫২ বার পঠিত

সাতক্ষীরার আকর্ষণ সড়কপথে সুন্দরব

ডেক্স রিপোর্ট :

সাতক্ষীরা জেলার আদি নাম সাতঘরিয়া। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কর্মচারী হিসেবে ১৭৭২ সালে নিলামে পরগনা কিনে গ্রাম স্থাপন করেন। তাঁর পুত্র প্রাণনাথ চক্রবর্তী সাতঘর কুলীন ব্রাহ্মণ এনে এই পরগণায় প্রতিষ্ঠিত করেন এবং নাম হয় সাতঘরিয়া। ১৭৮১ সালে বর্তমান যশোর, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, খুলনার বৃহত্তর অংশ একই জেলা হিসেবে আসে । এক অনির্বচনীয় নান্দনিক অনুভবের প্রাচীন জনপদ সাতক্ষীরা একদা রাজা প্রতাপাদিত্যের যশোহর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বারোভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী এ জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকায়। বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান।

সুন্দরবন, সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রতাপাদিত্যের পর ব্যাপক প্রশাসনিক উন্নতি হয় হেংকেলের আন্তরিকতায়। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে টিলম্যান হেংকেল প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ নিযুক্ত হন যশোর অঞ্চলে। ঐ বছরেই যশোরে প্রথম আদালত স্থাপিত হয়। ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি খুঁটি দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করেন।১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে যশোর পৃথক জেলার মর্যাদা পায়। এরপর থেকে যশোর অঞ্চল প্রশাসনিকভাবে বিকেন্দ্রীকরণ হতে থাকে। সাতক্ষীরা অঞ্চল মহকুমার মর্যাদা পায় ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে। মহকুমার মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথমে সাতক্ষীরাকে যুক্ত করা হয় নদীয়া জেলার সাথে। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে নদীয়া থেকে সাতক্ষীরাকে বিভক্ত করা হয় চব্বিশ পরগণার সাথে। খুলনা জেলার মর্যাদা পায় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে। জেলার মর্যাদা পাওয়ার পর লর্ড রিপনের (১৮৮০-৮৪) আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা মহকুমাকে খুলনা জেলার একটা মহকুমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের আওতায় সাতক্ষীরা মহকুমা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার একটি জেলা হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে এ জেলায় ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা, ৭৮টি ইউনিয়ন, ৯৬০টি মৌজা, ১৪২১টি গ্রাম ও ৩টি পৌরসভা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলায় ২ টি পৌরসভা , ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা , ৭৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১৪২৩টি গ্রাম রয়েছে এবং জাতীয় সংসদের ৪টি সংসীয় আসন রয়েছে।

★ জেলা প্রশাসক : মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

★ সংসীয় আসন সমূহ

★ সাতক্ষীরা ১ ( জাতীয় সংসদের ১০৫নং আসন ) – কলারোয়া উপজেলা এবং তালা উপজেলা
★সাতক্ষীরা ২ ( জাতীয় সংসদের ১০৬নং আসন )- সাতক্ষীরা সদর উপজেলা
★সাতক্ষীরা ৩ ( জাতীয় সংসদের ১০৭নং আসন ) – আশাশুনি উপজেলা, দেবহাটা উপজেলা এবং কালিগঞ্জ উপজেলার কিছু অংশ (চাম্পাফুল ইউনিয়ন, ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন, তারালী ইউনিয়ন, নলতা ইউনিয়ন)
★সাতক্ষীরা ৪ ( জাতীয় সংসদের ১০৮নং আসন )- শ্যামনগর উপজেলা, কালিগঞ্জ উপজেলা ( চাম্পাফুল ইউনিয়ন, ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন, তারালী ইউনিয়ন, নলতা ইউনিয়ন ব্যতীত)

★ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা

প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার বিচারে সাতক্ষীরার স্থান যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। প্রধান স্থাপনা সমূহ :

-প্রবাজপুর শাহী মসজিদ
-তেতুলিয়া জামে মসজিদ
-ইশ্বরীপুর হাম্মামখানা
-জাহাজ ঘাটা হাম্মামখানা ও তৎসংলগ্ন -প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ
-ঝুঁড়িঝাড়া ঢিবি
-দরবার স্তম্ভ
-গোবিন্দ দেবের মন্দির ঢিবি
-যীশুর র্গীজা (শ্যামনগর)
-যশোরেশ্বরী মন্দির
-শ্যাম সুন্দর মন্দির
-কোঠাবাড়ির থান
-ছয়ঘরিয়া জোড়াশিব মন্দির
-অন্নপূর্ণা মন্দির
-দ্বাদশ শিব মন্দির
-জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ
-নবরত্ন ডেমরাইল, ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন -কালিগঞ্জ উপজেলা

★ চিত্তাকর্ষক ও দর্শনীয় স্থান

★ সুন্দরবন;
-মান্দারবাড়ী সমুদ্র সৈকত – শ্যামনগর;
-জমিদার বাড়ি ও যশোরেশ্বরী মন্দির – শ্যামনগর;
-নলতা রওজা শরীফ – কালীগঞ্জ;
-উপকূলীয় উপ-সুন্দরবন; কালিগঞ্জ -উপজেলা ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন বর্ডার গার্ড -বাংলাদেশ, সীমান্ত ফাঁড়ি বাঁশঝাড়িয়া
দৃষ্টিনন্দন – গাবুরা, শ্যামনগর
-নীলকুঠি – দেবহাটা থানা;
– মাইচম্পার দরগা;
-লাবসা – সাতক্ষীরা;
-জাহাজমারী বিল (এবি পার্ক) – কলারোয়া;
-বৌদ্ধ মঠ – কলারোয়া;
-তেঁতুলিয়া মসজিদ – তালা;
-মোজাফফর গার্ডেন;
-বনলতা বাগান ও মিনি পিকনিক স্পট – -কালিগঞ্জ,সাতক্ষীরা;
-আব্বাস গার্ডেন;
-শ্যামনগর জমিদার বাড়ি (জমিদার -হরিচরণের বাড়ি)- শ্যামনগর;
-রেজওয়ান খানের জমিদার বাড়ি
-দেবহাটা জমিদার বাড়ি
-জাহাজঘাটা-ভুরুলিয়া, শ্যামনগর;
-মাটির টালি তৈরির কারখানা – কলারোয়া, সাতক্ষীরা;
-বনবিবির বটগাছ- দেবহাটা, সাতক্ষীরা;
-কলাগাছি, সুন্দরবন;
-আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার; মুন্সীগঞ্জ, শ্যামনগর;
-ভোমরা স্থল বন্দর, সাতক্ষীরা;
-শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক -গোপালপুর স্মৃতিসৌধ;
-রেডিও নলতা- নলতা, কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরা
-শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক,সাতক্ষীরা সদর,সাতক্ষীরা
-কেওড়া পার্ক,আশাশুনি,সাতক্ষীরা

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫