সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পটুয়াখালী জেলাধীন গলাচিপা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ব্রয়লার বিস্ফোরণে কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ২৪শের ছাত্র-জনতা ছাড়া অন্য কারো প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই, উপদেষ্টা ফওজুল কবীর খান চরের হোগলা পাতার দড়িতে স্বপ্ন বোনেন নারীরা মিঠামইন হাওরে ৫০ একর বোরো জমিতে সমালয় চাষাবাদ অষ্টগ্রামে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাচনে সভাপতি জাকির হোসেন মুকুল ও সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঔষধ প্রশাসনের মতবিনিময় সভা বিজয় দিবসে শহীদ স্মৃতি ফলকে চরফ্যাশন বিএনপির শ্রদ্ধা ও র্্যালি জামায়াতে ইসলামী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ইং (মহান বিজয় দিবস) উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরায় নাগরিক সংলাপ : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি ও সংকট নিরূপণে উপকূলীয় জেলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৭৯ বার পঠিত

ডেক্স রিপোর্ট :

জলবায়ু  পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও সংকট নিরূপণে উপকূলীয় জেলাগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। একই সাথে জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যয়েও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এজন্য আসন্ন কপ-২৮ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাঘরে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) আয়োজিত ‘উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু সংকট ও ন্যায় বিচার’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এই দাবি জানান।

বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও নানা সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বার বার নদী ভাঙনের ফলে মানুষ বাস্তু-ভিটা-সহায় সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্তার বিস্তার ঘটছে। মিষ্টি পানির উৎস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। লবণ পানি ব্যবহারের কারণে উপকূলীয় নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। মার্টির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদন। প্রাণ বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। বাল্য বিবাহ ও ঝরে পড়ার হার কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে শিশু শ্রম। নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। মানুষ কর্মসংস্থানের অভাবে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় থাকলেও তার কোনো সুফল উপকূলের মানুষ পাচ্ছে না। তারা নিজস্ব শক্তি সামর্থ্য ও জ্ঞান দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগে এক সময় বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তা না হলে সাতক্ষীরা অঞ্চলের জলবায়ু উদ্বাস্তুর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

বক্তারা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে উপকূলের জন্য উপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি জানান।

সংলাপে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির  আহবায়ক অ্যাড. আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর এসএএম আব্দুল ওয়াহেদ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পরিবেশ কর্মী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, সুজন-সাতক্ষীরার সভাপতি অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাশ, সংগীত শিল্পী আফফান রোজবাবু, সাংস্কৃতিক কর্মী মোসফিকুর রহমান মিল্টন, উন্নয়ন কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, মহিলা পরিষদ নেত্রী জোৎনা দত্ত, গণফোরাম নেতা আলী নূর খান বাবুল,  প্রথম আলো সাতক্ষীরা বন্ধুসভার সভাপতি কর্ন বিশ্বাস, সাতক্ষীরা ব্যোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি তারিক ইসলাম,শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য মুশফিকুর রহমান,সাতক্ষীরা ইয়ুথ হাবের হৃদয় মন্ডল, বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান প্রমুখ।

Facebook Comments Box
এই জাতীয় আরও খবর

ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডি দিবস অরবিন্দ রায়, স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশাল ট্র্যজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে আটিয়াগাঁও গ্রামে একই বাড়িতে শিশুসহ ১৮ নর-নারীকে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় গ্রামের সকল ঘর-বাড়ি। নির্মম হত্যাযজ্ঞে গ্রামের শিশুসহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন নারী পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানীরা। এই দিনটি আসলে এলাকার মানুষ আজও আৎকে উঠে সেই ভয়াবহ দিনটিকে স্মরণ করে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কোন সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের ৯ দিন পূর্বে দেশজুড়ে যখন কোণঠাসা পশ্চিমা হানাদার বাহিনী। ঠিক সেই মুহূর্তে ঘোড়াশালে কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হয় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বাঙালীর। বিজয়ের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তানীরা ফিরে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর ঘোড়াশালের আটিয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে প্রবেশ করেই পাকিস্তানিরা আবুল কাসেমের বাড়িতে হত্যাকাণ্ড চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা ৪ মাসের শিশু আয়শাসহ হত্যা করা হয় মোকছেদ আলী, মালাবক্স, শাহাজাহান, রহম আলী, আঃ হেকিম, হযরত আলী, আম্বিয়া খাতুন, মজিদা, শাহাজউদ্দিন, নেহাজউদ্দিন ও নেজু সহ প্রায় ১৮ নর-নারীকে। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বাড়িঘর। এভাবে শুধুমাত্র আটিয়াগাঁও গ্রামেই ২৫ থেকে ৩০ নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে আহত হয় আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন। হত্যাযজ্ঞের পরের দিনে তাদের অনেককেই গণকবর হিসেবে মাটি দেয়া হয়। সেই গণকবরগুলো আজ অরক্ষিত ঝোপঝাড়ে পরিণত। সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন উদ্যোগ। শহীদ পরিবারের খাতায়ও তাদের নাম আছে কিনা কেউ জানে না। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সহায়তায় শহীদের প্রতি পরিবারের জন্য দেয়া দুই হাজার করে টাকা দেয়া ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি । সরকারের পক্ষ থেকে আটিয়াগাঁও এলাকার শহীদ হযরত আলীর ছেলে মো: হাবিবুল্লাহ বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীরা আমার বাবা, দাদী ও ফফুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে আমাদের নি:স্ব করে দেয়া হয়েছিল। আমাদের চলার মতো তেমন কিছুই ছিলনা। আশপাশের গ্রামের লোকজন আমাদের চলার পথে সহায়তা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার আজ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ আমাদের খবর নেয়নি।’  এছাড়া শহীদ পরিবারের তালিকায় তাদের নাম আছে কিনা তাও জানেনা তারা।  একই এলাকার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্তার বাবুল জানান, পাক বাহিনীরা এই এলাকায় প্রবেশ করে প্রথমেই আমাদের ঘরে আগুন দেয়। এসময় বাড়িতে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। পাক বাহিনীর সদস্যরা ৪ মাসের শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তবে কয়েকজন বাড়ির পাশে গর্ত করে তাতে লুকিয়ে থেকে কোনক্রমে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থেকে রক্ষা পায়।   আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রাহাতুন বেগম জানান, তখন অগ্রহায়ন মাস বাড়ির পাশেই ধানের কাজ করছিলেন। এমন সময় পাক বাহিনীর সদস্যরা এসে বাড়িঘরে আগুন দেয়। আর গুলি করে হত্যা করে যাকে সামনে পায়। পরে নিহতদের গণকবর দেয়া হয়। এখানে এখন ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকার শহীদদের গণকবরস্থানে বধ্যভূমি নির্মাণের পাশাপাশি পরিবারগুলোর সহায়তায় সরকারকে পাশে দাড়ানোর দাবি জানান স্থানীয় ঘোড়াশাল পৌরসভা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সাবেক কমান্ডার ও সাবেক স্থানীয় কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়া। ঘোড়াশাল ট্র্যাজেডির কথা উল্লেখ করে শহীদ পরিবারেরগুলোর স্মৃতি রক্ষার্থে একটি বধ্যভূমি নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এলাকাবাসী। বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে আজ এলাকাবাসীর দাবি হত্যাযজ্ঞে নিহত শহীদদের তালিকা প্রনয়ন, গণকবর তৈরী করে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দেয়া অরবিন্দ রায় ০১৯১৮৭৬৭৬৫৫